নিত্যানন্দ নমস্তুভ্যম্ প্রেমানন্দ প্রদায়িনে।
কলৌ কল্মষনাশায় জাহ্নবাপতয়ে নমঃ ।।
নিত্য প্রেমানন্দ প্রদানকারী, কলিযুগের কল্মষনাশকারী, শ্রীজাহ্নবাদেবীর পতি শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর চরণে আমি নমস্কার করি।
শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর অপ্রাকৃত আবির্ভাব তিথিই নিত্যানন্দ ত্রয়োদশী। পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সংকীর্তন আন্দোলন প্রবর্তন করতে নবদ্বীপে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুরূপে আবির্ভূত হন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে তাঁর আন্দোলনে সহায়তা করার জন্য ভগবান শ্রীবলরাম নিত্যানন্দ প্রভুরূপে আবির্ভূত হন। তিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে হরিনাম প্রচারে সহায়তা করেন।
পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার একচক্রা গ্রামে হাড়াই পণ্ডিত এবং পদ্মাবতী দেবীর পুত্ররূপে নিত্যানন্দ প্রভু অবতীর্ণ হন। তিনি মাঘ মাসের শুক্লা ত্রয়োদশী তিথিতে জন্মগ্রহন করেন।
শৈশবে নিত্যানন্দ প্রভু একচক্রা গ্রামে মনোমুগ্ধকর এবং চমকপ্রদ লীলা সম্পাদন করেন যাঁর মর্মার্থ খুব কম লোকই অনুধাবন করতে পারত। পরবর্তীতে তিনি সারা ভারতজুড়ে তীর্থ পর্যটনে বের হন। এভাবে তিনি শ্রীধাম মায়াপুরে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সাথে মিলিত হন এবং দুই ভাই সম্মিলিতভাবে সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র সংকীর্তনের বন্যায় নিমজ্জিত করেন।
নিত্যানন্দ প্রভু শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর চেয়েও অনেক বেশি উদার এবং কোটিচন্দ্রের মতো শীতলতা প্রদানকারী তাঁর শ্রীচরণপদ্মদ্বয় (নিতাই পদ কমল, কোটি চন্দ্র সুশীতল) দুঃখযন্ত্রণাময় কলিযুগে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ভক্তদের একমাত্র আশ্রয়। তিনি অত্যন্ত দয়াপরবশ হয়ে সমগ্র বিশ্বকে কৃষ্ণপ্রেমে প্লাবিত করেছেন এবং যোগ্যতার বিচার না করেই ভগবৎপ্রেম প্রদান করেছেন।
নিত্যান্দ ত্রয়োদশীতে ভক্তগণ ইস্কন মন্দিরগুলো সমবেত হয়ে তাঁর আবির্ভাব তিথি উদযাপন করেন। মধ্যাহ্নে নিতাই-গৌর বিগ্রহের অভিষেকের পূর্বপর্যন্ত নিত্যানন্দ প্রভুর অশেষ মহিমারাশি আলোচনা করা হয়। সংকীর্তন সহযোগে অভিষেকের সময় নিত্যানন্দ প্রভু ভক্তদের মাঝে অপ্রাকৃত আনন্দের বিস্তার করেন। নিত্যানন্দ প্রভুর সন্তুষ্টি বিধানার্থে ভক্তগণ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত নৈবেদ্য ভোগ দেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই অভিষেক অনুষ্ঠান চলতে থাকেন। নিত্যানন্দ ত্রয়োদশীতে ভক্তগণ মধ্যাহ্ন পর্যন্ত উপবাস থাকেন। এভাবেই ইস্কন মন্দিরগুলোতে নিত্যানন্দ ত্রয়োদশী উদযাপিত হয়।