জগন্নাথদেবের রথযাত্রা

শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা

রথযাত্রা সমগ্র পৃথিবীর ভক্তদের জন্য অন্যতম বৃহৎ উৎসব। জগন্নাথ মানে ‘জগতের নাথ’। ভারতের ওডিশায় অবস্থিত জগন্নাথ পুরী পুরুষোত্তম ক্ষেত্র নামেও প্রসিদ্ধ। এটি চারধামের অন্যতম। এখানে পরমেশ্বর ভগবান বড় ভ্রাতা বলরাম ও ভগিনী সুভদ্রা দেবীসহ পূজিত হন। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সারা পৃথিবীতে থেকে লক্ষ লক্ষ ভক্ত অংশগ্রহণ করে। শাস্ত্রে আছে, রথে চ বামনম্ দৃষ্ট্বা পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে- রথোপবিষ্ট শ্রীজগন্নাথকে দর্শন করলে মানুষ জন্মমৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি লাভ করে।

ভক্তগণ শ্রীজগন্নাথ, বলদেব ও সুভদ্রা মহারাণীকে রথে চড়িয়ে গুণ্ডিচা মন্দিরে নিয়ে যান। উল্টোরথের পূর্বপর্যন্ত সেখানেই সাতদিন অবস্থান করেন। সংকীর্তন আন্দোলনের প্রবর্তক শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর অন্ত্যলীলায় জগন্নাথ পুরীতে অবস্থান করেছিলেন। তিনি প্রতিবছর নৃত্যকীর্তন সহযোগে রথযাত্রায় অংশগ্রহন করতেন।

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে শ্রীল প্রভুপাদ ইসকনে রথযাত্রা প্রচলন করেন। এটি এখন হরেকৃষ্ণ আন্দোলনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে। কৃষ্ণভক্তদের একত্র করতে রথযাত্রা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শ্রীল প্রভুপাদ চেয়েছিলেন সমগ্র পৃথিবীতে যেন জাকজমকপূর্ণভাবে এই উৎসবটি উদযাপিত হয়। ১৯৬৭ সালের ৯ জুলাই সান ফ্রান্সিসকোতে পাশ্চাত্যদেশে সর্বপ্রথম রথযাত্রার আয়োজন করা হয়। ক্রমান্বয়ে উৎসবটি জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। ছোটবেলায় শ্রীল প্রভুপাদও পড়শীদের নিয়ে রথযাত্রার আয়োজন করেছিলেন।

রথযাত্রা উৎসবের তাৎপর্য সম্পর্কে শ্রীল প্রভুপাদ বলেন, একবার সূর্যগ্রহণ উপলক্ষে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বড় ভাই বলরাম এবং ভগিনী সুভদ্রাকে নিয়ে রথে চড়ে দ্বারকা থেকে কুরুক্ষেত্রে এসেছিলেন। শ্রীকৃষ্ণের আগমনের সংবাদ পেয়ে ব্রজবাসী গোপগোপীরাও কুরুক্ষেত্রে চলে আসেন। শ্রীকৃষ্ণকে রাজবেশে দর্শন করে রাধারানী তাকে বৃন্দাবনে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন, যেখানে তাদের অন্তরঙ্গ লীলা সংঘটিত হয়েছিল। এই লীলাস্মরণ করে প্রতি বছর ভক্তগণ শ্রীজগন্নাথ, বলদেব ও সুভদ্রা মহারাণীকে রথে চড়িয়ে ভ্রমণ করান।

বাংলাদেশের ইসকন মন্দিরগুলো প্রতি বছর রথযাত্রা উৎসবের আয়োজন করে। আমরা সকলকে আমন্ত্রণ জানাই।

Share on

Facebook
Twitter
LinkedIn

অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ​

আরও উৎসব