শ্রীগদাধর পণ্ডিত প্রভুর শিষ্য কাষ্ঠকাটা শ্রীজগন্নাথ দাসের শ্রীপাট। আনুমানিক ১৪৮৮ খ্রিষ্টাব্দে শ্রীনৃসিংহ চতুর্দশী তিথিতে জগন্নাথ দাস এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শ্রীরূপ গোস্বামীকৃত শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণগণোদ্দেশদীপিকা অনুযায়ী তিনি ‘তিলকিনী’সখী, চিত্রা সখীর উপসখী। তাঁর পিতার নাম সর্বানন্দ। বাল্যকালে শ্রীজগন্নাথ দাস পিতৃমাতৃহীন হয়ে তাঁর পিতৃব্যের নিকট লালিত-পালিত হন। শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু যখন প্রকাশিত হয়ে লীলাবিলাস নাম-কীর্তনে মত্ত হয়েছেন, তখন একদিন শ্রীজগন্নাথ দাস স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে শান্তিপুরে এসে স্বপার্ষদ শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভুকে দর্শন করেন এবং শ্রীগদাধর পণ্ডিত গোস্বামীর কাছ থেকে দীক্ষা প্রাপ্ত হন। তাই তিনি শ্রীল গদাধর পণ্ডিত গোস্বামীর শাখা।
শ্রীনাথ চক্রবর্তী, আর উদ্ধব দাস।জিতামিত্র, কাষ্ঠকাটা জগন্নাথ দাস \ (চৈ.চ. আদি ১২/৮৪)
শাখানির্ণয় নামক গ্রন্থ অনুযায়ী তিনি ত্রিপুরা রাজ্যে হরেকৃষ্ণ আন্দোলন প্রচার করেন। পরে তাঁর পিতৃব্যের আকর্ষণে পুনরায় তিনি আবার কাষ্ঠকাটায় ফিরে যান এবং সেখানে বিবাহাদি করে সংসারী হন। পিতৃপুরুষগণের সেবিত শ্রীদামোদর শালগ্রাম না পেয়ে ঘাসিপুকুরের তীরে অনশন করলে স্বপ্নাদেশ পেয়ে শ্রীযশোমাধব বিগ্রহের সেবা শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি বাংলার নবাব সরকারের অধীনে চাকরি স্বীকার করেন। নবাব সরকার তাঁর কাজে সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে নিকটবর্তী আড়িয়ল গ্রামের জায়গিরদার প্রদান করেন। কিছুদিন পরে জগন্নাথ দাস যশোমাধব বিগ্রহকে নিয়ে আড়িয়ল গ্রামে গিয়ে তাঁর শ্রীপাট স্থাপন করেন।
দেশভাগের পর জগন্নাথ দাসের পরবর্তী বংশধর গোস্বামীরা এ যশোমাধব বিগ্রহকে পশ্চিম বাংলায় নিয়ে আসেন এবং তাঁরা পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করেন। বর্তমানে এ যশোমাধব বিগ্রহ শ্রীনবদ্বীপ শহরের বৌ বাজারে স্টেট ব্যাংকের কাছেই শ্রীশচীনন্দন গোস্বামীর বাড়িতে সেবিত হচ্ছেন।
পথনির্দেশ
কাটাদিয়া বর্তমান বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। মুন্সীগঞ্জ বা ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে এই কাটাদিয়া শ্রীপাটে আসা যায়। বর্তমানে এ কাষ্ঠকাটায় কোনো স্মৃতিচিহ্ন নেই এবং আড়িয়ল গ্রামেও কোন শ্রীপাটের সন্ধান নেই। আড়িয়ল গ্রামটি একই জেলার টঙ্গীবাড়িতে অবস্থিত।
আরো তীর্থ স্থান দেখতে ক্লিক করুন>>