পঞ্চসার (শ্রীবল্লভ চৈতন্য দাস)

শ্রীগদাধর পণ্ডিত গোস্বামীর শিষ্য শ্রীবল্লভ চৈতন্য দাসের শ্রীপাট। “শাখা নির্ণয়” গ্রন্থে বলা হয়েছে-

কৃষ্ণ প্রেমময়ং স্বচ্ছং পরমানন্দদায়িনম্।
বন্দে বল্লভচৈতন্যং লীলাগানযুতান্তরম্ \

শ্রীবল্লভ চৈতন্য দাস কুলজী গ্রন্থে এবং ব্রাহ্মণ সমাজে ঠাকুর বল্লভ নামেই পরিচিত। বল্লভ চৈতন্য সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ইনি হিমালয়ে মহাশক্তির উপাসনা করতেন। একদা দেবী তাঁকে আদেশ করলেন যে, মূল মহাশক্তি শ্রীমতী রাধারানী শ্রীগৌর প্রেমলক্ষ্মীরূপে নবদ্বীপ-লীলায় বিরাজ করছেন। এ প্রকার আদেশ পেয়ে শ্রীবল্লভ চৈতন্য দাস নবদ্বীপে এসে কৃষ্ণপ্রেমে বিভোর হন। রাঢ়দেশে তাঁর পূর্ব নিবাস থাকলেও শ্রীমন্মহাপ্রভুর আজ্ঞায় তিনি বঙ্গদেশে বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারের জন্য বিক্রমপুরে আগমন করে পঞ্চসারে শ্রীপাট স্থাপন করেন। ইতিপূর্বে মহাপ্রভু শ্রীগৌরাঙ্গ দেবও বিদ্যাবিলাসের জন্য তদানীন্তন বিদ্যাপীঠ বিক্রমপুর বিজয়করত পদ্মপার হয়ে নূরপুরে পদার্পণ করেন। সে সময় পঞ্চসারে কুড়িটি টোল ছিল।

এ পঞ্চসারে মহাপ্রভু শ্রীগৌরাঙ্গদেব কিছুকাল অবস্থান করে সেখানকার সপ্তনদীর সঙ্গমস্থলে কার্তিক স্নান করেন। তদবধি এ স্নান উপলক্ষে মেলা বসে। ঠাকুর বল্লভ চৈতন্যকে মহাতেজস্বী দেখে তদানীন্তন মুসলমান সুবেদার ষাট নম্বর তালুকদার জায়গির দিয়েছিলেন। স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে শ্রীবল্লভ চৈতন্য দাস স্বপ্রকাশ শ্রীরাধারমণ বিগ্রহ স্থাপন করেন। তিনি তথায় পূর্ণচন্দ্র ভট্টাচার্যের কন্যাকে বিবাহ করেন। তাঁর চার পুত্র ও এক কন্যা ছিল। কনিষ্ঠ পুত্র রামকৃষ্ণ বৃন্দাবনে গমন করেন। সেখানে চিরকুমার ব্রত গ্রহণ করে সেবাকার্য করেন। ফরিদপুর জেলায় খাটরার বাসুদেব-প্রতিষ্ঠাতা বৈদিক বিষ্ণুদাসকে ঠাকুর বল্লভ চৈতন্য স্বকন্যা সম্প্রদান করেন।

পথনির্দেশ

পঞ্চসার বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জগামী বাসে মোক্তারপুর গিয়ে সেখান থেকে পঞ্চসার যাওয়া যায়।

আরো তীর্থ স্থান দেখতে ক্লিক করুন>>

Share on

Facebook
Twitter
LinkedIn